সূত্রমতে, বাংলাদেশের বাজারে সিংহভাগ ফ্রিজ বিক্রি করে ওয়ালটন। গত বছর তারা ফ্রিজ বিক্রি করেছিল প্রায় ১৫ লাখ। চলতি দশকে স্থানীয় বাজারে ওয়ালটনের মার্কেট শেয়ার প্রায় ৭৫ শতাংশ। ওয়ালটনের প্রতিদ্বন্দ্বী এখন ওয়ালটনই। প্রতি বছরই তারা নিজেদেরকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। আর ২০১৯ সালে ২০ লাখ ফ্রিজ বিক্রির নতুন মাইলফলক অর্জনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতিও নিয়েছে। নিজস্ব কারখানায় তৈরি করবে বিশ্বের সবচেয়ে দামী বা গ্লোবাল মডেলের ফ্রিজ। ওয়ালটনের এসব ফ্রিজ হবে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব ও সৃজনশীল ডিজাইনের। অন্যান্য গ্লোবাল ব্র্যান্ডের ফ্রিজের চেয়ে উন্নতমানের হলেও, দাম হবে অনেক সাশ্রয়ী।
দেশের বাজারে টার্গেট পূরণের জন্য নেয়া হয়েছে বিশেষ কর্মূসূচি। ইতোমধ্যে, কারখানার উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন বিভাগ পর্যন্ত সর্বত্র যুগপোযোগি ও আধুনিক কর্ম-পরিকল্পনা নিয়েছে ওয়ালটন। উৎপাদন প্রক্রিয়া, গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএনডি), মান নিয়ন্ত্রণ বা কোয়ালিটি কন্ট্রোলসহ (কিউসি) বিভিন্ন বিভাগের স্থাপন করা হয়েছে বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি। গ্রাহকদের হাতে সৃজনশীল ডিজাইনের গ্লোবাল মডেলের পণ্য তুলে দিতে ইলেকট্রনিক্স খাতের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন।
ওয়ালটনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম জানান, ২০১৯ সাল হবে ওয়ালটন তথা বাংলাদেশের বাজারে এক বিশাল মাইলফলক অর্জনের বছর। শুরু হবে বিশ্ব বাজারে সেরা ব্র্যান্ড হওয়ার যাত্রা। এ লক্ষ্যে রোডম্যাপ তৈরি হয়ে গেছে। গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী দামে বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তির গ্লোবাল মডেলের নতুন ফ্রিজ বাজারে আনবে ওয়ালটন।
ওয়ালটন বিপণন বিভাগের প্রধান এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. এমদাদুল হক সরকার বলেন, প্রতিবছরই ফ্রিজ বিক্রিতে ৩০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে ওয়ালটন। চলতি বছরকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে ২০ লাখ ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট ধরা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যবহার করা হবে পাঁচ ধরনের বিপণন চেইন। প্লাজা, পরিবেশক, কর্পোরেট, অনলাইন এবং আন্তর্জাতিক বিপণন। এই চ্যানেলগুলোকে করা হচ্ছে আরও আধুনিক ও কার্যকরী। প্রায় দেড়শ বা তারও বেশি মডেলের ফ্রস্ট ও নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ উৎপাদন ও বাজারজাত করবে ওয়ালটন। যুক্ত হবে নতুন বৈচিত্র্যময় মডেলের ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির ফ্রস্ট ও নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ। সেইসঙ্গে ক্রেতা আকর্ষণের জন্য ডিজিটাল ক্যাম্পেইনও শুরু হবে।
জানা গেছে, দেশের গন্ডী পেরিয়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন পণ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এবার ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত বিশ্বের বাজারে রপ্তানির বৃহৎ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিজনেস ইউনিটকে আরও শক্তিশালী করতে নিয়োগ দিচ্ছে বিশ্ব ইলেকট্রনিক্স বাজারের বিপণন বিশেষজ্ঞদের।
ওয়ালটন সূত্রমতে, আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিজনেস কনফারেন্স ও পণ্য প্রদর্শীতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে ওয়ালটন। চীনের ক্যান্টন ফেয়ার, নাইজেরিয়ার লাগোস ফেয়ার, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইলেকট্রনিক্স ফেয়ারসহ অতি সম্প্রতি জার্মানির চিলভেন্টা প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে তারা। কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স এবং হোম অ্যাপ্লায়ান্সের বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মেলা বার্লিনে ‘আইএফএ ফেয়ার ’ ও লাস ভেগাসে ‘সিইএস ফেয়ার’এ অংশ নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, আন্তর্জাতিক মান যাচাইকারি সংস্থা নাসদাত ইউনিভার্সাল টেস্টিং ল্যাব থেকে মান নিশ্চিত হয়ে ওয়ালটন প্রতিটি ফ্রিজ বাজারে ছাড়ছে। ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার, ন্যানো হেলথ কেয়ার ও এন্টি ফাংগাল ডোর গ্যাসকেট প্রযুক্তি ব্যবহার করছে ওয়ালটন। দেয়া হচ্ছে এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি। কম্প্রেসারে রয়েছে দশ বছর পর্যন্ত গ্যারান্টি। এছাড়া সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের সহজ কিস্তি সুবিধা এবং স্থানীয় আবহাওয়া উপযোগী করে দেশেই তৈরি হয় বলে গ্রাহকপ্রিয়তার শীর্ষে ওয়ালটন ফ্রিজ।